আমাদের বাড়িতে এমন অনেক বস্তু আছে যেগুলোতে খুব সহজে জীবাণু, ময়লা, ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে এবং ধুলোর আস্তর পরে যায়। আর, এগুলোতে অবিশ্বাস্য দ্রুততার সাথে জীবাণু বংশ বিস্তার করতে পারে। আমাদেরকে যদি প্রশ্ন করা হয়, আচ্ছা, চট এমন একটা জিনিষের নাম বলেন, যা খুব নোংরা। চিন্তা না করেই চোখের পলকে আমাদের মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায়, টয়লেট।
কিন্তু, বাথরুমের মতোই বা তার চেয়েও বেশি নোংরা হতে পারে, এমন কিছু জিনিষ বা জায়গা রয়েছে, যেগুলোর নাম দেখে চমকে উঠবেন যে কেউ। এমন কিছু আপাতদৃষ্টিতে পরিষ্কার, কিন্তু, “নোংরা জিনিষ” নিয়ে সাজানো হয়েছে এই লেখাটি।
বরফ (Ice)

যুক্তরাষ্ট্রের ফাস্ট ফুডের রেস্তোরাগুলোতে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, রেস্তোরাগুলোয় যে বরফ কুঁচি ব্যবহার করা হয় তাতে ৭০% ক্ষেত্রে টয়লেটের পানির লাইনের থেকে বেশি পরিমাণে ব্যাকটেরিয়ার রয়েছে। বরফ বানানো মেশিনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় মেশিনগুলো যেন বরফ নয়, E. Coli ব্যাকটেরিয়া তৈরীর কারখানায় পরিণত হয়েছে। উল্লেখ্য, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনার কাপে আসল বরফের স্কপ ব্যবহার করে সাধারণ বরফ দিয়ে সার্ভ করে, ফলে ব্যাকটেরিয়া আর্ধিক্য দেখা দেয়।
টয়লেটের মেঝে (Restroom floors)

যা হওয়ার, তাই হয়েছে এখানে। পাবলিক টয়লেটের মেঝেতে প্রতি বর্গইঞ্চিতে ২০ লক্ষ ব্যাকটেরিয়া থাকে। আর, টয়লেটের সিটের প্রতি বর্গইঞ্চিতে গড়পরতা ৫০ টি করে ব্যাকটেরিয়ার দেখা মিলে।
অফিস ডেস্ক (Office desks)

সুসজ্জিত অফিস ডেস্কে টয়লেট থেকে ৪০০ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এর কারণ হিসেবে ডেস্কের উপর রাখা স্মার্টফোন, কিবোর্ড, মাউস, পানি/কফির গ্লাস, প্রিন্টার ইত্যাদিকে দায়ী করা হয়।
কিবোর্ড (Keyboards)

একটি কম্পিউটার কিবোর্ডে টয়লেট সিটের থেকে ২০০ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকায় নোংরার জিনিষের লিস্টে এর নাম চলে এসেছে। যে সকল ডেস্কে একাধিক ব্যক্তি কিবোর্ড ব্যবহার করেন, সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও নাজুক। কিবোর্ডে নোংরা হাতের সংস্পর্শ থেকে ছড়িয়ে পড়া ব্যাকটেরিয়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা, এমনকি কয়েক দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
ফোন (Cellphones)

শুনতে অবাক লাগলেও, আমাদের সাধের স্মার্টফোনে থাকে টয়লেট সিটের থেকেও ১০ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়ায় পূর্ণ। আর, এ ফোন থেকে আমাদের আঙ্গুলের মুখমণ্ডল ও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাপারটা অনেকটা এমন যে, আপনি আপনার সুন্দর গাল দিয়ে কমোডের মধ্যে একবার ঘষাঘষি করে এসেছেন। 🙂
রেস্টুরেন্টের মেনু (Restaurant menus)

টয়টেলের সিটের থেকে ১০০ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে রেস্তোরার প্রিন্টেড মেনুতে। রেস্তোরাতে প্রতি দিন শত শত কাস্টোমার এসে মেনুগুলো স্পর্শ করে। তাদের স্পর্শ থেকে মেনুগুলোতে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।
তরকারী কাটা বোর্ড (Chopping boards)

চপিং বোর্ডগুলোতে টয়টেলের কমোডের গায়ে লেগে থাকা বিষ্টার থেকে বেশি বিষ্টা লেগে থাকে। কি অবাক হচ্ছেন! এর কারণ হল, বাজার থেকে কিনে আনা গোস্তের সাথে উচ্চ মাত্রায় গরুর গোবর লেগে থাকে, যা খালি চোখে দেখা যায় না। আর, গোবর মানেই ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের কারখানা। আর, রন্ধন প্রক্রিয়ার এক পর্যায়ে এই গোস্তগুলো চপিং বোর্ডের উপরে রাখা হয়।
টুথব্রাস (Toothbrushes)

আমাদের দেশে ওয়াসার সাপ্লাই পানিতে মানুষের বর্জ্যে থাকা ফিকাল ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব রয়েছে, যা অদূর ভবিষ্যতেও দূর করা সম্ভব হবে না। এই ব্যাকটেরিয়ার একটি ভাল আবাসস্থল হয়ে দাঁড়ায় আমাদের নিত্য ব্যবহার্য টুথব্রাসগুলো। আর, টুথব্রাসগুলো সচরাচর আবদ্ধ বাথরুমে রাখা হয়, তার তাপমাত্রা ব্যাকটেরিয়া উৎপাদনের জন্য আদর্শ পরিবেশ দেয়।
কার্পেট (Carpets)

প্রতি বর্গইঞ্চিতে ২ লক্ষ ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত আমাদের ঘরের মেঝেতে থাকা কার্পেটগুলো টয়টেলের সিটের চেয়েও ৪০০০ গুণ বেশি নোংরা। আমাদের দেহ থেকে প্রতি ঘণ্টায় ঝড়ে পড়া দেড় লক্ষ মৃত চামড়ার কোষগুলো এই ব্যাকটেরিয়াগুলোতে খাওয়াইয়া-দাওয়াইয়া তরতাজা থাকতে সাহায্য করে।
রেফ্রিজারেটর (Refrigerator)

খাবার-দাবার তরতাজা রাখার জন্য বাড়িতে আনা রেফ্রিজারেটর কেনা হলেও, দু:খজনক সত্য এই যে, এগুলোতে উচ্চমাত্রায় E. Coli ব্যকটেরিয়াসহ আরও অনেক ধরণের ব্যাকটেরিয়া অবাধে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। কাঁচা গোস্ত থেকে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয় বেশি।
এছাড়াও, ঠিক মত পরিষ্কার না করে রাখায় মাছ ও শাকসবজি থেকে ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে রেফ্রিজারেটরগুলোতে। সংক্রমণকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখতে ফ্রিজগুলোর ভিতরের তাপমাত্রা মাত্রা স্বাভাবিক তাপমাত্রা থেকে যেন কম থাকে, এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
শপিং ব্যাগ (Reusable shopping bags)

শপিং করার জন্য একই ব্যাগ বারবার ব্যবহারের করার ফলে শপিং ব্যাগগুলোতে বয়ে আনা মাছ-গোস্ত থেকে E. Coli ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে। আর, যদি গাড়ির ব্যাকডোরে করে ব্যাগগুলোকে বাসায় আনা হয়, তবে গাড়ির ব্যাকডোরের গরম আবহাওয়ায় ব্যাকটেরিয়াগুলো দ্রুত বংশবিস্তার করে। সবচেয়ে খারাপ খবর হল, এই ব্যাগগুলোকে আলসেমি করে নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না।
টিভি রিমোট কন্ট্রোলার (TV remote control)

হোটেলের টিভির রিমোট কন্ট্রোল নোংরা অবস্থায় থাকে, বাসারগুলোর কথাও তথৈবচ। হোটেলগুলোতে অবস্থানকারী বোর্ডাররা খাবার সময় বা অপবিত্র অবস্থায়, এমনকি অসুস্থ অবস্থাতেও রিমোট কন্ট্রোল ব্যবহারের সময় বাটনগুলোতে হাতের ময়লা ও জীবানু ছড়িয়ে পড়ে। আর এই রিমোটগুলো কালেভদ্রে হয়তো পরিষ্কার করা হয়।
পরবর্তীতে যদি কখনো বাসার রিমোট পরিষ্কার করতে চান, তবে বাজারের ক্লোরোক্স (Clorox) ক্লিনজার দিয়ে পরিষ্কার করার কথা পরিকল্পনা করে রাখতে পারেন।
দরজার নব (Door knobs)

আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেন যে, বাসা ও অফিসের দরজার নবগুলোতে বিভিন্ন মানুষের হাতের স্পর্শে অসংখ্য জীবানু বাসা বাঁধে। এ কারণে অনেক শুচিবায়ু মানুষ দরজার নব নিজ হাতে খুলতে চান না। নবে থাকা ভাইরাস এই নবগুলোতে নিশ্চিন্তে বংশ বিস্তার করতে থাকে, আর, এখান থেকে ভাইরাসের সংস্পর্শে এসে মানুষের মধ্যে অসুখ-বিসুখ ছড়িয়ে পরে।
লাইটের সুইচ (Light switch)

জেনে অবাক হবেন, ঘেরে ব্যবহৃত সুইচের প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে ২১৭টি ব্যাকটেরিয়া থাকে। ভিন্ন ভিন্ন অনেক হাতের সংস্পর্শে আসাতে সুইচগুলোতে জীবানু সহজেই বাসা বাঁধতে পারে। আর এ কারণেই বোর্ডের সুইচগুলোকে জীবানু ছড়ানোর সহজ একটি স্পট হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর, এই সুইচগুলোকে কদাচিৎ পরিষ্কার করা হয়। এই জন্য সুইচকে নোংরা জিনিষের তালিকায় স্থান দেয়া হয়েছে।
কিচেন সিংক (Kitchen sink)

বাইরে থেকে আনা শাক-সবজি, মাছ, গোস্ত এনে ধৌত করা হয় বিধায়, রান্না ঘরের সিংক বাইরে জীবানু দ্বারা প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে। এতে রয়েছে পশুর মলের ব্যাকটেরিয়া, যে ধরণের ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায় টয়লেটের ভিতরে ও এর সিটে। এই কারণে চিকিৎসকবৃন্দ পরামর্শ দেন, সিংকে মাছ-গোস্ত ধোয়ার পরে অবশ্যই ডিটারজেন্ট বা ডিজিনফ্যাক্টেন্ট দ্বারা পরিষ্কার করে রাখার।
বাথটাব (Bathtub)

বাথটাবের পানির বেরিয়ে যাবার এক্সিট পাইপের মুখে প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে ১৯,৪৬৮টি ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই কারণে ঝা-চকচকে বাথটাবকে পরিষ্কার ভাবার মোটেই কোন কারণ নেই। বরং, এটি টয়লেটের মতই জীবানু দ্বারা পরিপূর্ণ।
বালিশ (Pillow)

বালিশে কোন ধরণের জীবানু বা ব্যাকটেরিয়া নাই! মানুষের দেহের মৃত কোষ, ধূলা-বালির মাইট (mite), ফাংগাসের জীবানু (fungal spores), পোলেন (pollen) ছাড়াও শরীরের নোংরা জলীয় অংশের কারণে ছড়িয়ে পড়া জীবানু প্রিয় আবাসস্থল হল বিছানার বালিশ! এ কারণে বালিশ নিয়মিতভাবে রোদে দেয়া উচিত।
ম্যাট্রেস (Mattress)

ম্যাট্রেসগুলো একেকটি ধূলা-বালুর ব্যাংক! আপনি কি জানেন, আপনার ম্যাট্রেস কিনার ১০ বছর পর এর ওজন অনেক বেড়ে যায়। এ জন্য ধন্যবাদ দিতে পারেন, ধূলা-বালি ও এর জীবানুদেরকে, যারা মনের সুখে আপনার মূল্যবান ম্যাট্রেসের উপরে বছরের পর বছর হাগু করে যাচ্ছে। 🙂
পোষা প্রাণীর খাবারের পাত্র (Pet food bowl)

পোষা প্রাণীদের খাবারের জন্য ব্যবহৃত পটের ভিতরের দিকে প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে ২,১১০ টি ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। আমাদের খাবারের প্লেটগুলো ধুয়ে রাখা হয়। পশুদের খাবারের পর পটও ধুয়ে রাখা হয় না কেন?
কাগজের মুদ্রা (Money)

কাগজের মুদ্রার প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে ২ লক্ষ ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। চিন্তা করতে পারেন! এ জন্য কাগজের নোট স্পর্শ করার পরে অবশ্য অবশ্যই হাত ধূয়ে নেয়া উচিত।
দরজা-জানালার পর্দা (Draperies)

জানালার ভারি পর্দাতে জমা হয় আমাদের ও পোষা বিড়াল বা কুকুরের চুল, পশম, ধূলা-বালি, ময়লা। এগুলো জীবানুদের প্রিয় খাবারের উৎস হওয়াতে, বাসভবনের পর্দাগুলো জীবানুদের আদর্শ বাসস্থান। আপনার যদি নিয়মিত এ্যালার্জির সমস্যা হতে থাকে, তবে চিকিৎসকগণ বাসস্থানের পর্দাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
টয়লেট শাওয়ার হেড (Shower Heads)

বাথরুমের এ্যাটাচড বা হ্যান্ড শাওয়ারের যে স্থান থেকে পানি বেরিয়ে আসে, তা কতটা পরিষ্কার? সত্যি বলতে কি, শাওয়ারের হেডের ভিতরের গুমোট তামপাত্রা, ভেজা আবহাওয়ার কারণে এখানে অবাধে ব্যাকটেরিয়া বংশ বিস্তার করে থাকে।
মেয়েদের পার্স ও হ্যান্ডব্যাগ (Purses and Handbags)

মেয়েদের পার্স ও ব্যাগগুলোতে অনেক ধরণের নোংরা জিনিষপত্র রাখা হয়, নাম করতে গেলে বলতে হয়, ফোন, টাকা-পয়সা, প্রসাধনী সামগ্রী, ইত্যাদি। আর, এগুলো যে সব ব্যাকটেরিয়ার ডিপো, তা আমরা উপরের কয়েকটি প্যারা থেকে জানতে পেরেছি। এ কারণে, জীবানুর সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আপনার ব্যাগগুলোকে ব্যবহারের পর ভালভাবে পরিষ্কার করে রাখতে হবে।
কিচেন স্পঞ্জ (Kitchen sponges)

কিচেন স্পঞ্জগুলোকে বাসার সবচেয়ে নোংলা জিনিষগুলো একটি বলে গণ্য করা হয়। রান্না ঘরে ব্যবহৃত স্পঞ্জের প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে রয়েছে ১ কোটি ব্যাকটেরিয়া! হ্যা, ঠিকই শুনেছেন। এ কারণে এই স্পঞ্জকে টয়লেটের চেয়ে নোংরা জিনিষের তালিকায় রাখতে হয়েছে।
এই স্পঞ্জে যেমন রয়েছে মানুষ ও মাছ-গোস্তের মল, তেমনি রয়েছে আরও মানব দেহের জন্য ভয়ংকর ক্ষতিকর অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া। এ জন্য স্পঞ্জগুলো দীর্ঘ দিন ব্যবহার না করে, নিয়মিতভাবে বদলানো উচিত। এখনই যাবেন নাকি, পুরাতনটা ফেলে দিয়ে নতুন একটা কেসে রেখে আসুন না।
পরিশেষে, স্বয়ং টয়লেটের কি অবস্থা?

আমাদের লেখার মূল চরিত্র, “টয়লেটের কমোড” সামনে দেখতে পাচ্ছি। 🙂 একে প্রতিদিন পরিষ্কার রাখুন। টয়লেট এমন একটি জায়গা যা প্রতিনিয়ত নোংরা হয়ে থাকে, একে প্রতিদিন টয়লেট ক্লিনারের মত হার্ডলাইনার জীবানু ধ্বংসকারী দিয়ে পরিষ্কার করে রাখা উচিত। এটা শুধু আপনার ব্যাপার নয়, এর সাথে পুরো পরিবারের সুস্থতা নির্ভর করছে।
পৃথিবীর পরিবেশটাই জীবানু দ্বারা পরিপূর্ণ। আমরা প্রতিনিয়ত: জীবানুর সংস্পর্শে আসছি। আমাদের শরীরের প্রতিটি স্থানই জীবানুর দ্বারা সয়লাব হয়ে যায়। এদের থেকে পরিত্রাণ নেই। নিদেনপক্ষে আমরা যেটা করতে পারি, নিজেদের শরীরকে যথাসাধ্য পরিষ্কার করে রাখার চেষ্টা করব।
সবাই ভাল থাকুন!