“তুমিই আমার জীবনের আলো” – এই কথাটা সব বাবা-মায়েরা তাদের আদরের শিশুদের আদর করে বলে থাকেন। কিন্তু, আমরা সবাই জানি যে, আপনি যদি আলোর রশ্মি হয়ে থাকেন, তবে আপনার এমন গতিতে ভ্রমণ করতে পারবেন যে গতি দ্বারা মাত্র এক সেকেন্ডে পুরো পৃথিবীকে ৭.৫ বার প্রদক্ষিণ করতে পারবেন। আবার, যদি আপনি শব্দের গতিতে ছুটতে পারেন, তবে পুরো পৃথিবীকে এক চক্কর দিতে আপনার লাগবে চার ঘণ্টার মত। কি অবাক হচ্ছে!
আকর্ষণীয়, তাই না? এই তথ্যগুলো শিশুদের জন্য অনেক আকর্ষণীয় বৈজ্ঞানিক তথ্য, যা এমনকি বড়দেরকেও বিস্মিত করে। তাই, এই লেখার মধ্য দিয়ে শিশুদের জন্য বেশ কিছু পূর্বে এমন একটি আকর্ষণীয় চমৎপ্রদ, চটুল বৈজ্ঞানিক ঘটনা/তথ্য সংকলন করা হয়েছে, যা পড়ে তাদের মুখ হা হয়ে যাবে 🙂
তোমাদের জন্য শুরুতেই একটা প্রশ্ন
একটা সাধারণ প্রশ্ন করা যাক। আচ্ছা, “বিজ্ঞান” কি?
এটি একটি পদ্ধতিগত এবং কাঠামোগত গবেষণা যেখানে পর্যবেক্ষণ, প্রমাণ জমা করা, পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট ঘটনাকে ব্যাখ্যা করা হয়। এটি এমন একটি ক্ষেত্র যা আমাদের চারপাশের জগৎকে আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করে এবং মানুষ, পশু এবং অন্যান্য জীবের উপকারের জন্য ভাল জিনিসগুলি তৈরি, বৃদ্ধি এবং সংরক্ষণের জন্য আমাদের সহায়তা করে।
তাহলে শুরু করা যাক বৈজ্ঞানিক এমন সব তথ্য, যা জেনে রাখা ভাল।
মানব শরীরের বৈজ্ঞানিক তথ্য
- মানব শরীরের ডিএনএ (DNA) একটার সাথে একটা জোড়া লাগালে যে ধৈর্য্য হতে তা প্লুটো গ্রহ (Pluto) থেকে সূর্য গিয়ে আবার প্লুটোতে ফিরে আসা যাবে।
- একজন মানুষের হাঁচির গতিবেশ প্রায় ১০০ মাইল। চিন্তা করেন, হাঁচির বিপরীত প্রতিক্রিয়ায় মানুষ যদি উড়ে যেত!
- মাছিরা তাদের দেহের ওজনের তুলনায় ১৩০ গুণ দূরত্বে লাফ দিতে পারে। তাহলে, যদি একটি মাছির উচ্চতা মানুষের মত ছয় ফুট হত, তবে এটা ৭৮০ ফুট উঁচুতে লাফ দিতে পারত। কি সাংঘাতিক! শত শত সুপারম্যান এসেও মাছিদের দমন করা যেত না।
- একটি ইলেকট্রিক ঈল মাছ তার শরীরের মধ্যে ৬৫০ ভোট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে। কোন মানুষ ঈল মাছকে ছুঁলে, নিশ্চিত তার জীবনের সর্বোচ্চ ইলেকট্রিক শকটা খাবে।
- সূর্যের আলো কেন্দ্র থেকে সূর্যের পৃষ্ঠে পৌঁছাতে ৪০,০০০ বছর লাগে। কিন্তু সূর্য থেকে পৃথিবীতে সেই আলো পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র আট মিনিট।
পৃথিবীর সাথেও রয়েছে বৈজ্ঞানিক সত্য
পৃথিবীতে রয়েছে আমাদের ভালবাসার নীড়। একে নিরাপদ রাখা এবং সর্বাঙ্গীন উন্নতির জন্য, এটি সম্পর্কে কিছু মৌলিক বিষয় আমাদের জানতে হবে।
- চার থেকে পাঁচ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল। অর্থাৎ পৃথিবীটা চাঁদা ও সূর্যের সমবয়সী।
- আমাদের গ্রহটি বেশিরভাগই লোহা, কার্বন এবং সিলিকন দ্বারা তৈরি, কোথাও কোথাও কিছুটা ম্যাগনেসিয়াম অস্তিত্ব রয়েছে। অথচ, আমরা চিন্তা করি এটা মানুষ দিয়ে ভর্তি!
- এটি আমাদের সৌরজগতের একমাত্র গ্রহ যা তার বায়ুমন্ডলে ২১% অক্সিজেন এবং তার পৃষ্ঠদেশে পানি ধারণ করে।
- পৃথিবীর পৃষ্ঠটি টেকটনিক প্লেটের তৈরি, যা ভূপৃষ্ঠ এবং এবং ভূকেন্দ্রের মধ্যে অবস্থিত একটি পাথুরে জমির উপর ভেসে আছে। এ কারণে আমাদের ভূপৃষ্ঠ যে কোন সময়ে ভূমিকম্প এবং আগ্নেয়উৎপাতের মত ক্ষতিকর প্রাকৃতিক দূর্যোগে পতিত হয়ে থাকে।
- পৃথিবীতে মানুষ ছাড়াও প্রায় ৮ লক্ষ ৭০ হাজার অনন্য প্রজাতি বিচরণ করে। এর মধ্যে, দুই লক্ষ বিশ হাজার মহাসাগরে এবং বাকিরা ভূপৃষ্ঠে বিচরণ করছে।
- পৃথিবীর তিন-চতুর্থাংশ জল দিয়ে পূর্ণ। মহাকাশচারীরা মহাকাশ থেকে প্রথম যখন গ্রহটি দেখেছিলেন, তখন তারা বেশিরভাগ স্থানে পানি দেখেছিলেন। আর, তাতেই তারা এ পৃথিবীকে ‘নীল গ্রহ’ নামে অভিহিত করেছিলেন।
পরিবেশগত বৈজ্ঞানিক সত্য
আমরা কি খেয়াল করেছি, কিভাবে পৃথিবীতে ঋতুর পরিবর্তন হয়? মনুষ্যসৃষ্ট আবর্জনাসমূহের কি হবে? কি কারণে জলবায়ু শীতল হয়, বা, গরম করে তোলে? পরিবেশগত বিজ্ঞান পড়ার সময় এইগুলি আপনি শিখবেন। এখানে পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ে কিছু তথ্য রয়েছে, যেগুলি বাচ্চাদেরকে জানা উচিত। এগুলো জানার মাধ্যমে আমরা আমাদের অত্যাশ্চর্য গ্রহটি সুরক্ষা করতে পারব।
- প্লাস্টিক পঁচন প্রক্রিয়ায় মাটির সাথে মিশে যেতে সময় নেয় ৪৫০ বছর। কাঁচের ক্ষেত্রে এই সময়টি অবিশ্বাস রকমের বেশি। মাত্র ৪,০০০ বছর।
- টয়লেট পেপার তৈরী প্রতিদিন কাঁটা পড়ে ২৭ হাজার তরতাজা গাছ! কি সাংঘাতিক!
- গ্রহের ৯৭% পানি লবনাক্ত, পান করার অনুপযুক্ত। ২% হিমায়িত অবস্থায় রয়েছে। আমাদের ব্যবহারযোগ্য পানির পরিমাণ ১%!
- মাংস শিল্প বৈশ্বয়িক উষ্ণতা (global warming) বৃদ্ধিতে প্রতি বছর সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে। বনভূমি কেটে ফেলা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। উষ্ণতা বৃদ্ধিতে প্রায় ৬৮% গাছপালা বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- বিশ্বের জনসংখ্যা বর্তমানে ৭০০ কোটিরও বেশি এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ৮০০ কোটিতে পৌঁছাবে।
- দুর্ভাগ্যবশত, পৃথিবীতে যে সমস্ত প্রজাতির অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল, ধারণা করা হয় তার ৯৯% বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
আশ্চর্যজনক প্রাণী বিজ্ঞান তথ্য
পশু রাজত্ব। এ একটি বিস্ময়কর রাজ্য। হাত ধরে থাকা ভোদড়, শক্তিশালী ঈল, গান গাওয়া তিমি, লিঙ্গ পরিবর্তনকারী চিংড়ি,… প্রাণী রাজ্যের এ রকম অসংখ্য তথ্য আমাদের বিস্মিত করে। এখানে প্রাণীদের সম্পর্কে কিছু আশ্চর্যজনক তথ্য দেয়া হল, যা বাচ্চারা জানতে পছন্দ করবে।
- অক্টোপাসে তিনটি হৃদপিণ্ড আছে, এটি একটি অদ্ভুত বিজ্ঞান সত্য, তাই না!
- দু’টা অদ্ভুত ফ্যাক্ট শুনে প্রাণীদের বৈচিত্রময় ঘটনা আমাদেরকে বিস্মিত করে বৈকি! তা হল, গলদা চিংড়িরা তাদের মুখমণ্ডল দিয়ে মূত্র ত্যাগ করে এবং কচ্ছপ তাদের বুকের মাধ্যমে শ্বাস নিতে পারে!
- পুরুষ, এবং নারীর নয়, সিন্ধুঘোটক জন্ম দেয়। এটি একটি অদ্ভুত বৈজ্ঞানিক সত্য, তাই না!
- কাকাপো পাখির একটি কড়া, বোটকা গন্ধ রয়েছে যে গন্ধের কারণে অন্যান্য শিকারী প্রাণীরা সহজেই আকৃষ্ট হয়। এই কারণে, এ পাখি প্রজাতিটি অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
- কাঠবিড়ালিরা তাদের জীবদ্দশায় নতুন গাছ গজাতে যে পরিমাণ সাহায্য করে তা একজন মানুষ থেকেও অনেক বেশি। কি অবাক হলে! কাঠবিড়ালিরা তাদের খাবার, বিশেষত: ফলের বিঁচি, মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা। কিন্তু, পরে আর মনে করতে পারে না সেগুলো কোথায় লুকিয়ে রেখেছিল।
- নব্বই শতাংশ ক্ষেত্রে সিংহী শিকার করে থাকে। যখন খুব প্রয়োজন পড়ে, তখন সিংহও শিকারে সাহায্য করে থাকে।
আপনি কি উদ্ভিদ বিজ্ঞান এই তথ্যগুলো জানতেন?
উদ্ভিদ আমাদের গ্রহকে সবুজ হিসাবে তৈরি করে। তারা দিনের বেলা অক্সিজেন তৈরী করে আমাদের বেঁচে থাকতে সাহায্য করে । তারা এই গ্রহকে বসবাস উপযোগী করেছে। গাছ এবং গুল্ম সম্ভবত এই গ্রহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জীবনধারা। এখানে তাদের সম্পর্কে কিছু আকর্ষণীয় তথ্য তুলে ধরা হল যা আপনি সম্ভবত জানতেন না।
- মানুষের মত, উদ্ভিদরা তাদের সমগোত্রীর গাছদের চিনে এবং নিজেদের ভিতরে সহযোগিতামূলক আচরণ করে।
- পৃথিবীতে ৮০,০০০ প্রজাতির ভক্ষনযোগ্য উদ্ভিদ রয়েছে। আমরা কেবল প্রায় ৩০ টি প্রজাতি আমরা খেয়ে থাকি।
- মানুষ অনবরত বন ধ্বংস করে চলেছে। এ পর্যন্ত আমরা বিশ্বের বনভূমির ৮০% পরিষ্কার বা ধ্বংস করে ফেলেছি।
- বিশ্বের প্রাচীনতম জীবন্ত গাছটি ক্যালিফোর্নিয়াতে রয়েছে, এবং এটি প্রায় ৪,৮৪৩ বছর বয়সী।
- পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু গাছের উচ্চতা প্রায় ৩৭৯.১ ফুট। এটিও ক্যালিফোর্নিয়াতে রয়েছে।
- পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জীবন্ত বৃক্ষরাজি হচ্ছে কুয়াকিং এসপেন (Quaking Aspen), যার বৈজ্ঞানিক নাম Populus tremuloides। যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ স্টেটে অবস্থিত এই গাছ ওজন প্রায় ৬,০০০ টন!
মহাকাশের কিছু বৈজ্ঞানিক বিস্ময়কর তথ্য
আমাদের সৌরজগতে রয়েছে সূর্য, নক্ষত্র এবং গ্রহসমূহ। মিল্কি ওয়ে, নক্ষত্রপুঞ্জ এবং গ্যালাক্সির অন্য সবকিছু মাঝে রয়েছে বিশাল ফাঁকা স্থান, যা আমরা সাধারণত স্পেস বা আউটার স্পেস হিসেবে উল্লেখ করি। এখানে এই আউটার স্পেস সম্পর্কে কিছু আকর্ষণীয় তথ্য তুলে ধরা হল।
- সূর্যের তুলনায় পৃথিবী আয়তন একটি বালুর কণার মত, যা আমাদের পৃথিবী থেকে ৩ লক্ষ গুণ বড়।
- স্পেস একটি সম্পূর্ণ নীরব জায়গা, অর্থাৎ, কোনও সাড়া-শব্দ নাই। একেবারে নি:স্তবদ্ধ। আমাদের পৃথিবীর মত বায়ু না থাকাতে আউটার স্পেসে শব্দ এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে পারে না।
- শুক্র গ্রহটি আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে উষ্ণতর গ্রহ। সেখানে তাপমাত্রা ৪৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস!
- একটি গ্রহের মধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে ঐ গ্রহে একজন ব্যক্তির ওজন নির্ভর করে। মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর চেয়ে কম, যার মানে যদি আপনি পৃথিবীতে ২০০ পাউন্ড ওজন হন, তবে মঙ্গল গ্রহে আপনার ওজন হবে মাত্র ৭৮ পাউন্ড হবে। মজার না!
- চাঁদে পৃথিবীর মত কোনো বায়ুমণ্ডল নাই। যে কারণে পৃথিবীর মহাকাশচারীদের রেখে আসা জুতার দাগ আগামী ১০০ মিলিয়ন বছরেও মুছবে না।
- পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র সূর্যের মূল তাপমাত্রা ১৫ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলিসিয়াস!
বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক সত্যসমূহ
প্রাচীন যুগে দীর্ঘ দিন ধরে মানুষ বিশ্বাস করত যে পৃথিবী একটি সমতল স্থান। তারা বিশ্বাস করত যে দেবতা এবং দেবীর অনুভূতিগুলির পরিবর্তনের ফলে ঋতুর পরিবর্তন হয়। দুষ্ট প্রেতাত্মাদের দ্বারা রোগের সৃষ্টি হয় বলে মনে করা হত। এমন অবস্থায় বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণা নিয়ে এগিয়ে এসে মানুষের এই সকল কুসংস্কারাচ্ছন্ন ভুল ধারণা ভেঙ্গে দিলেন। যদি গুণী বিজ্ঞানীরা এগিয়ে না আসতেন, তবে আমরা এখনও অজ্ঞতাতে বসবাস করতাম।
- আইনস্টাইন ছিলেন এমন বিজ্ঞানীদের মধ্যে সর্বসেরা। পরবর্তীতে গবেষণা করার জন্য তার মস্তিস্ককে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে।
- মহাবিশ্বে পৃথিবীকে কেন্দ্র করে অন্যান্য সব গ্রহ-নক্ষত্র-গ্যালাক্সিগুলো ঘুরছে – প্রাচীনকালের মানুষদের এই ভুল ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণ করে বিজ্ঞানী কোপের্নিকাস। তিনিই প্রথম আমাদের সৌরজগতের মডেল তৈরী করে দেখান, যেখানে সূর্য হচ্ছে আমাদের সৌরজগতের কেন্দ্রস্থল এবং অন্যান্য গ্রহসমূহ তাকে প্রদক্ষিণ করছে।
- লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি শুধু চিত্রশিল্পীই ছিলেন না, তিনি একাধারে গণিতবিদ, বিজ্ঞানী, শিল্পী, লেখক এবং একজন সঙ্গীতজ্ঞ ছিলেন!
- পানির প্রতিস্থাপকতার সূত্রটি প্রথম মানুষের গোচরে আনেন বিজ্ঞানী আর্কিমিডিস। টাবের পানি গোসল করার সময় হঠাৎ তার মাথায় সূত্রটি সম্পর্কে চিন্তার উদয় হয়। এ ব্যাপারে আর্কিমিডিস সম্পর্কে একটা মজার কথা চালু আছে। তার নব্য আবিষ্কৃত সূত্র নিয়ে এতটাই উচ্ছসিত হয়ে পড়েন যে, তিনি “ইউরেকা” বলে চিৎকার করে টাব থেকে নেমে পড়েন গবেষণাগারের দিকে দৌঁড় দেন। তিনি খুশিতে এতটাই উচ্ছসিত হয়ে পড়েন যে, তার খেয়ালই ছিল না, তিনি নগ্ন শরীরে দৌঁড় দিয়েছিলেন।
- ইউরেনিয়াম থেকে তেজস্ক্রিয় রেডিয়াম আবিষ্কারের পথিকৃত ম্যাডাম মেরি কুরিকে দু’ দু’বার নবেল পুরষ্কার দেয়া হয়।
শিশুদের জন্য প্রযুক্তিগত বৈজ্ঞানিক তথ্য
প্রযুক্তিগত উন্নয়নেই মানব সত্যতাকে উন্নতির দিকে ধাবিত করছে। প্রাযুক্তিক উন্নয়ন মানুষের জন্য একটা পর্যায় পর্যন্ত মঙ্গল বয়ে আনে। কিন্তু, টেকনোলজির উপর মানুষ এতটাই নির্ভরশীল ও মোহাচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে যে, তা মাঝে মাঝে ক্ষতির কারণও হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমরা প্রতিদিন ব্যবহার করি এমন কিছু প্রাযুক্তিক ব্যবহার সম্পর্কে কিছুটা আঁচ দেওয়ার চেষ্টা করা হল।

- প্রথম হোম ভিডিও গেমটি ১৯৬৭ সালে তৈরি হয়েছিল। এর নাম দেয়া হয়েছিল ‘ব্রাউন বক্স’। কারণ ডিভাইসটি বাদামী রঙের ছিল।
- বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার, ইনিয়াক (ENIAC)। এটি রাখার জন্য বিরাট একটি ঘরের প্রয়োজন হয়েছিল। ওজন ছিল প্রায় ২৭ টন।
- ইন্টারনেট এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব একই জিনিস নয়।
- যদিও রোবোটিক্স বিদ্যায় বিজ্ঞানীরা এখন সর্বশক্তি নিয়োগ করেছেন। কিন্তু, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি সেই ১৪৯৫ সালেই রোবট তৈরির ছক করে ফেলেছিলেন।
- আধুনিক ক্যামেরা তৈরীর গুরুত্বপূর্ণ পথ তৈরী করে দিয়েছিল যে যন্ত্র, তার নাম “ক্যামেরা অবসকুরা”। গ্রীক ও চিনারা এই যন্ত্র দিয়ে স্থিরচিত্রকে স্ক্রিনের উপরে দেখাতে পারত।
- পূর্বে এমন একটি আকর্ষণীয় প্রযুক্তির বিকাশ হয়েছিল, যার মাধ্যমে গাছপালার বর্জ্য ব্যবহার করে উৎপন্ন মিথেন গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা যেত!
প্রকৌশল বিদ্যার বৈজ্ঞানিক তথ্য
প্রকৌশল বিদ্যা এমন একটি চমৎকার ক্ষেত্র যার সাহায্যে আমরা কত অদ্ভূত জিনিষপত্রই না তৈরী করছি! ভবন থেকে শুরু করে, যানবাহন, গ্যাজেট, আরও কত কি!
- বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু সেতু হচ্ছে ফ্রান্সের মিলাউ ভায়াডাক্ট (Millau Viaduct), যা সুদৃঢ় স্তম্ভ ও তারের মাধ্যমে ১,০০০ ফুটের বেশি উচ্চতায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।
- দুবাইয়ের সমুদ্র তীরে পাম দ্বীপগুলি পৃথিবীর শীর্ষ প্রকৌশল বিস্ময়গুলোর মধ্যে অন্যতম। এই দ্বীপগুলো কৃত্রিমভাবে তৈরী করা।
- বিশ্বের বৃহত্তম কণা গতিশীলকারী যন্ত্র জেনেভাতে অবস্থিত। ভূগর্ভস্থ একটি সুরঙ্গে একটি স্থাপন করা হয়েছে। আর, এই যন্ত্র পরিচালনায় নিয়োজিত আছেন ১০,০০০ বিজ্ঞানী।
- পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এক্স-রে টেলিস্কোপ অবজার্ভেটরির নাম ‘চন্দ্র’। একটি বানিয়েছেন নাসা’র বিজ্ঞানীরা।
- গলফ খেলায় ব্যবহৃত বলটির ডিজাইনরার একজন ইংরেজ প্রকৌশলবিদ, নাম তার উইলিয়াম টেইলর (William Taylor)। তার ডিজাইনের বৈশিষ্ট্য হল, এটি বাতাসের সাথে ঘর্ষণকে কমিয়ে বলকে আরও অধিক দূরত্বে ছুড়ে ফেলা সম্ভব হয়।
বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলোর একটি হলো মিশরের The New Vally Project, যেখানে ইঞ্জিনিয়াররা কয়েক মিলিয়ন একর মরুভূমিকে কৃষি জমিতে পরিণত করার চেষ্টা করছে। কল্পনা করুন, আমরা যদি এভাবে পৃথিবীকে সবুজ গাছপালা দিয়ে ঢেকে দিতে পারতাম! স্মরণাতীত কালে এক সময় পৃথিবী যেমন ছিল, তেমন অবস্থায় ফিরে যেত আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীটা।
বিজ্ঞান একটি অসাধারণ বিষয় যার ছোঁয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যকার প্রতিভাকে বের করে আনে। অভিভাবক হিসেবে আপনাকে যা করতে হবে, আপনার শিশুর মধ্যে বিজ্ঞান সম্পর্কে আগ্রহ তৈরি করা। শিশুর সামনে বিজ্ঞানের অপার সৌন্দর্য্য ও সম্ভাবনাকে তুলে ধরতে হবে, যাতে আপনার শিশু বিজ্ঞানকে আরও ভালভাবে বুঝতে পারে। এমনভাবে শিশুকে বোঝাতে হবে, যাতে বিজ্ঞানের গবেষণাকে তারা নিজেদের ভালবাসায় পরিণত করে। এভাবেই একদিন হয়ত আমাদের শিশুদের মধ্য থেকে আরও একজন আইনস্টাইন উদিত হবেন।
আপনার বাচ্চাদের কাছে বিজ্ঞানের কোন বিষয়টি সবচেয়ে আকর্ষনীয় মনে হয়। আমাদের ফেসবুক, টুইটার বা গুগল+ পেজে তা লিখে জানাতে পারেন।