কুরআন ও হাদীস অনুযায়ী মানুষের সাথে মোট ৫ জন “অশরীরী সৃষ্টি” সর্বদা উপস্থিত থাকেন। এই অশরীরী সৃষ্টির মধ্যে রয়েছেন, সম্মানিত ফেরেশ্তা এবং জ্বীন। মানুষের জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত এই সকল ফেরেস্তা ও জ্বীন মানুষকে সঙ্গ দিয়ে থাকে। এদের উপস্থিতির কথা পবিত্র কুরআন ও হাদীসের বর্ণনা থেকে আমরা জানতে পারি।
১। ডানে ও বামে থাকা দুই জন ফেরেস্তা সর্বদা উপস্থিত থাকেন
মানুষের ডানে ও বায়ে দুই জন সম্মানিত ফেরেস্তা মানুষের সাথে থেকে তাদের সকল ভাল ও মন্দ কাজের বৃত্তান্ত লিপিবদ্ধ রাখেন।
‘যখন দুই ফেরেশতা ডানে ও বামে বসে তার আমল লিপিবদ্ধ করে’; ‘সে যে কথাই উচ্চারণ করে, তাই লিপিবদ্ধ করার জন্য তার কাছে সদা প্রস্ত্তত প্রহরী (ফেরেশতা) রয়েছে’ (ক্বাফ ৫০/১৭-১৮)।
২। মানুষের সামনে ও পিছনে দুই জন ফেরেস্তা রয়েছেন
মহান আল্লাহ তায়া’লার নির্দেশে দুই জন সম্মানিত ফেরেস্তা মানুষকে সামনে ও পিছনের দিকে উপস্থিত থেকে তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেন।
“মানুষের জন্যে তার সামনে ও পেছনে একের পর এক প্রহরী থাকে; ওরা আল্লাহর আদেশে তার রক্ষাণাবেক্ষণ করে, নিষচয় আল্লাহ কোন সম্প্রদায়ের অবস্থা পরিবর্তন করেন না যতক্ষণ না তার নিজেদের অবস্থা নিজেরা পরিবর্তন কের, কোন সম্প্রদায়ের সম্পর্কে যদি আল্লাহ অশুভ কিছু ইচ্ছা করেন তবে তা রদ করবার কেউ এবং তিনি ছাড়া তাদের কোন অভিভাবক নেই।”। সুরা রাদঃ আয়াত ১১
৩। প্রত্যেক মানুষের সাথে ১ জন করে জীন রয়েছে
প্রত্যেক মানুষের সঙ্গে স্বতন্ত্র একজন করে জিন রয়েছে, যে তাকে কখনও ছেড়ে যায় না। তাকে “ক্বারিন” বা “সঙ্গী” বলা হয়। এটা মানুষের এই জীবনের পরীক্ষার অংশ হিসাবে নিয়োজিত করা হয়েছে। জিনটি তাকে সর্বদা অবমাননাকর কামনা-বাসনায় উৎসাহিত করে এবং সার্বক্ষণিকভাবে তাকে ন্যায়-নিষ্ঠা হতে অন্য দিকে সরিয়ে নেবার চেষ্টা করে।
রাসুল (সঃ) এই সম্পর্কে এভাবে বর্ণনা দিয়েছেন,
“তোমাদের প্রত্যেককে জিনদের মধ্য হতে একজন সঙ্গী দেয়া হয়েছে।” সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, “এমনকি আপনাকেও ইয়া আল্লাহর রাসুল (সঃ)? তিনি বলেনঃ এখন সে আমাকে শুধু ভাল করতে বলে।”
[মুসলিম কর্তৃক সংগৃহীত Sahih Muslim, enlgish trans, vol. 4 p.1540, no. 7134]
কুরআনে আল্লাহ তায়া’লা বলেন,
“আর যে পরম করুণাময়ের যিকির থেকে বিমুখ থাকে, আমি তার জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করি; ফলে সে হয়ে যায় তার সঙ্গী”
(সূরাহ আয-যুখরুফ। আয়াত ৩৬)