প্রত্যেক মানুষের শরীরে ক্যালসিয়াম প্রয়োজন। ক্যালসিয়ামের অভাবে হাড় ক্ষয়ের সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের শরীরে যে হাড় তৈরি হয়, তার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি হয় ২০-৩০ বছর পর্যন্ত। বয়স বাড়ছে মানেই হাড়ে ক্ষয়।
৪০ পেরোলেই ক্যালসিয়ামের অভাব। এ সমস্যা নারীদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। তবে কিছু খাবার রয়েছে যা খেলে হাড়ক্ষয় রোধ করা যায়। আপনি জানেন কী? বাদাম খেলে পোক্ত হবে হাড়।
চল্লিশের পর থেকেই শরীরে দেখা দেয় ক্যালসিয়ামের অভাব। আর ক্যালসিয়ামের অভাব মানেই হাড়ে সমস্যা। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে হাড়ের ঘনত্ব কমতে থাকে। আর অস্টিওপরোসিসর সমস্যা দেখা দেয়।
আমাদের শরীরে যে হাড় তৈরি হয় তার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি হয় ২০-৩০ বছর পর্যন্ত। ৩০-৪০ এর মধ্যে হাড়ের যেমন ক্ষয় হয়, তেমনই রিপ্লেসমেন্টও হয়। এই দুটোর ভারসাম্য থাকে।
৪০-এর পর থেকে হাড়ের ক্ষয় শুরু হয়। কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে তা একটু আগেই হয়। অস্টিওক্লাস্ট নামে একটি কোষ হাড়ের ক্ষয় করে। নারীদের ইসট্রোজেন হরমোন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অস্টিওক্লাস্টিং বেড়ে যায়। এতে হাড় ক্ষয় হতে পারে। আর পুরুষদের ক্ষেত্রে হয় সেনাইল অস্টিওপরোসিস।
তাই ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত হাড়ের ঘনত্ব বাড়িয়ে রাখার জন্য কিছু পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
দুপুরে কিংবা রাতের খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ, মাংস, ডিম, দুধ থাকুক বা না থাকুক, কয়েকটা বাদাম রাখতেই হবে।
চিকিৎসকরা বলছেন, দিনে অন্তত তিন-চারটি আমন্ড খাওয়া ভালো। তবে আমন্ড, আখরোট, কাজু থেকে চীনাবাদাম এবং হাড় মজবুত রাখতে ভালো সব ধরনের বাদামই। কোনো বাদামে কার্বোহাইড্রেট বেশি, কোথাও প্রোটিন। হাড় সুস্থ রাখতে কমবেশি সব বাদামই উপকারী।
হাড়ের ক্ষতি হয় যেসব অভ্যাসে
ধূমপান ও মদ্যপানঃ
সুস্থ নতুন হাড় গঠনে ও বিদ্যমান হাড়ের টিস্যুকে দ্রুত ভেঙে ফেলে সিগারেটের ধোঁয়া। এর ফলে অস্থি ক্রমশ দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। তাই ফুসফুসের পাশাপাশি ধূমপান হাড়েরও ক্ষতি করে। আর মদ্যপান করলে বছরে হাড়ের ক্ষতির পরিমাণ ৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। মদ্যপানের কারণে হাড়ের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ব্যাহত হয় হাড়ের ক্যালসিয়াম শোষণ প্রক্রিয়াও।
সূর্যের আলোর অভাবঃ
সূর্যের আলোতে রয়েছে ভিটামিন ডি। এটি শরীরের হাড়কে সুরক্ষা দেয় এবং ক্যালসিয়াম শোষণ করতে সহায়তা করে। ভিটামিন ডি এর ঘাটতির ফলে পেশী দুর্বল ও ব্যথাযুক্ত হয়। আর খাদ্যের মাধ্যমে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম গ্রহণ না করলে আপনার শরীর তার প্রয়োজন মেটাতে হাড় থেকে ক্যালসিয়াম গ্রহণ করবে। তাই প্রতিদিন একটু করে হলেও রোদটাকে গায়ে লাগান। সকাল বেলার রোদটা এক্ষেত্রে খুবই উপকারী।
অতিরিক্ত কফি পান করাঃ
কফিতে রয়েছে ক্যাফেইন। যা শরীর থেকে ক্যালসিয়াম বের করে করে দেয়। আর ক্যালসিয়াম কমে গেলে হাড়ের পুনর্নির্মাণের ক্ষমতা কমে যায়।
ভারসাম্যহীন খাদ্যাভ্যাসঃ
খাবার থেকেই সাধারণত ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ হয়, আর এই খাদ্যাভ্যাস যদি ভারসাম্যহীন হয় তবে দেখা দেবে পুষ্টিহীনতা। তাই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন।
আমাদের দেশী জাতের সস্তায় যে বাদাম পাওয়া যায়, তার উপকারীতা বিদেশী কোন বাদামের থেকে কোন অংশে কম না। তবে, বিভিন্ন জাতের বাদাম ভিন্ন ভিন্ন মিনারেলস থাকে। বাদামের তথ্যবহুল সাত-সতেরো জানতে পড়ুন বাদাম সম্পর্কিত এই লেখাটি। নিরাশ হবেন না।
এই আর্টিকেলটিতে বিদেশী অনলাইন পোর্টালের সাহায্য নেয়া হয়েছে।