ঈদের দিনটা সবার কাছেই বিশেষ। এই দিনে সবাই নিজেকে সুন্দর দেখাতে চায়। এক মাস রোজা রাখার জন্যে সবার খাদ্যাভ্যাসে একটা পরিবর্তন আসে আর সেই প্রভাব আমাদের চেহারায় ভালোভাবেই পড়ে। কিন্তু ঈদে সবাই সেই ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলে নিজেকে ফ্রেশ দেখতে চায়।
আর তাই ঈদের প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় নানা ধরণের ঈদ প্রস্তুতি। অনেকেই আবার ঈদের বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ত্বকের, চুলের ও পুরো দেহের যত্ন নেয়া শুরু করে দেন। আবার কেউ কেউ চলে যান পার্লারে। ত্বক, চুল সেই সাথে হাত-পায়ের যত্ন নিতেও নারীরা এখন কার্পণ্য করেন না। তবে এই সব রূপচর্চা কিন্তু ঘরে বসেও করা সম্ভব। আর তাছাড়া ঈদের ঠিক আগে রাসায়নিক পদার্থ বেশি আছে, এমন প্রসাধন ব্যবহার না করাই ভালো। ফেসিয়াল করলেও তা চানরাতে নয়। ঈদের আগের দিন শুধু মেহেদি ছাড়া পারলারে অন্য কোনো সেবা না নেওয়াই ভালো। সেক্ষেত্রে এখন থেকে ঘরে বসে ফেসিয়াল ও ফেস মাস্ক ব্যবহার করেও কিন্তু ত্বকে উজ্জ্বলতা ও লাবণ্যতা বাড়ানো সম্ভব।
ঘরে বসে ফেসিয়াল করার উপায়
ফেসিয়াল করার জন্য প্রথমে আমাদের মুখটা ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। ঠান্ডা দুধ, লেবুর রস ও সামান্য লবন মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরী করে তুলো দিয়ে ওই মিশ্রণটিকে সারা মুখে ও গলার অংশে হালকা করে ঘষে লাগিয়ে নিতে হবে। এবার হালকা গরম পানি দিয়ে মুখটি পরিষ্কার করে নিতে হবে। তাতে করে ত্বকের প্রথম ধাপের ময়লা দূর হবে।
এরপর একটি বাটিতে একটি পাকা কলা নিয়ে কাঁটা চামচ দিয়ে পিষে নিন। এতে একটি টমেটোর রস চিপে দিন। এরপর এতে যোগ করুন ১ চা চামচ অলিভ অয়েল। ভালো করে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এটা মুখে লাগিয়ে রাখুন ১০-১৫ মিনিট। এই সময়ে চোখে শসার কুচি দিয়ে শুয়ে থাকতে পারেন। এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে মুছে ফেলুন।
মুখ মুছে ফেলে ত্বকে টোনার লাগান। আর টোনার যদি না থাকে তাহলে কাঁচা দুধ একটি তুলোয় ভিজিয়ে সেটা সারা মুখে এবং গলায় মাখতে পারেন। মিনিট পাঁচেক পরে শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
সব শেষে একটি ভালো ময়েসচারাইজার ব্যবহার করতে হবে। প্রাকৃতিক সবচেয়ে ভালো ময়েসচারাইজার হচ্ছে অলিভ অয়েল এবং বাটার। ১ চা চামচ অলিভ অয়েল কিংবা বাটার হাতে নিয়ে ১০ মিনিট মুখে ভালো করে ম্যাসাজ করুন। ব্যস হয়ে গেল আপনার ফেসিয়াল করা। সপ্তাহে দুইবার করতে পারেন এই ফেসিয়াল। কারণ এতে ত্বকে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হবে না। বরং ত্বক থাকবে সুন্দর ও স্বাস্থ্য উজ্জ্বল।
শুধু ঈদের জন্যেই নয় নিয়মিত এভাবে পরিচর্যা করলে সারা বছরই থাকতে পারবেন আকর্ষণীয়।
পায়ের যত্ন

এবার আসি হাত পায়ের যত্নের প্রসঙ্গে। ত্বকের পাশাপাশি হাত পায়েরও সমপরিমাণ যত্ন নেয়া উচিৎ। এতে করে আপনার রূপচর্চা পরিপূর্ণ হবে।
- প্রথমে নেইলপলিশ লাগানো থাকলে তা উঠিয়ে ফেলুন।
- একটি পাত্রে হাল্কা গরম পানি, সামান্য শ্যাম্পু, ১ চিমটি লবন এবং ১ কাপ ভিনিগার মিশিয়ে তাতে হাত পা ১০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। পায়ে ব্যথা থাকলে পানিতে একটু লবণ ছিটিয়ে নিন।
- এরপর পা মুছে নখ কেটে নিন। কিউটিকলে সমস্যা থাকলে কিউটিকল কাটার দিয়ে সাবধানে অতিরিক্ত কিউটিকল সরিয়ে নিন।
- এবার ঝামা দিয়ে পায়ের নিচে ও গোড়ালি ঘষে নিন। এতে করে পায়ের মরা চামড়া উঠে যাবে।
- এরপর নখে পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে আবার ভিজিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ।
- এবার ভালোমত হাত-পা মুছে নিয়ে একটি বাটিতে মুলতানি মাটি, সামান্য লেবুর রস এবং পানি দিয়ে পেস্টের মতো তৈরি করুন। এরপর তা হাতে ও পায়ে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
- শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে মুছে ফেলুন। এরপর ভালো কোনো বডি লোশন লাগিয়ে দিন।
ব্যস হয়ে গেলো আপনার মেনিকিউর, পেডিকিউর।
পার্লারে যেয়ে অনেক টাকা আর সময় নষ্ট না করে ঘরে বসেই আপনি নিজের হাত ও পায়ের যত্ন নিতে পারেন ।
তাহলে দেরি করে লাভ কি ? আজ থেকেই শুরু হয়ে যাক আপনার অঙ্গসমূহের বিশেষ যত্ন।