ইতিহাসে তিনি আসলাম আল-হাবশী আল-আসওয়াদ নামে পরিচিত। নামের অর্থ হাবশার কৃষ্ণাঙ্গ আসলাম। সেকালে হাবশার অনেক কৃষ্ণাঙ্গ মানুষ আরবে ছিল। সম্ভবতঃ এই আসলামও তাদেরই একজন। তিনি ছিলেন এক ইয়াহুদীর ছাগলের রাখাল। তার ছাগল চড়াতেন।
ইসহাক ইবন ইয়াসার বলেন, খায়বার যুদ্ধে রাসূলুল্লাহ (সা.) একদিন ইয়াহুদীদের একটি দুর্গ ঘেরাও করে আছেন। তখন একজন কালো রাখাল এক পাল ছাগল নিয়ে রাসূলুল্লাহর (সা.) নিকট আসেন। তিনি ছিলেন একজন ইয়াহুদীর বেতনভুক্ত মজুর। তিনি আরজ করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.), আমার সামনে ইসলামকে উপাস্থাপন করুন।! রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর সামনে ইসলামকে তুলে ধরেন। লোকটি তখনই ইসলাম গ্রহণ করেন।
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইসলামের দা’ওয়াত দানের ব্যাপারে কাউকে তুচ্ছ মনে করতেন না। তাই তিনি এই কালো রাখালটির সামনে ইসলামের পরিচয় তুলে ধরে, তাকে তা গ্রহণের আহ্বান জানান।
লোকটি ইসলাম গ্রহণের পর বলেনঃ আমি এই ছাগলগুলির মালিকের মজুর। আমার নিকট এগুলি তার আমানত। এখন এ ছাগলগুলি আমি কি করবো ?
তুমি এগুলির মুখে একটু আঘাত করে মালিকের বাড়ির দিকে ছেড়ে দাও, তারা মালিকের কাছে ফিরে যাবে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেনঃ
কালো লোকটি উঠে দাঁড়ালেন। তারপর একমুঠ ধুলোবালি উঠিয়ে ছাগলগুলির মুখের দিকে ছড়িয়ে দিয়ে বললেনঃ তোমরা তোমাদের মালিকের নিকট ফিরে যাও, আল্লাহ তোমাদের সাথে থাকবেন। ছাগলগুলি দলবদ্ধভাবে ফিরে গিয়ে সেই দুর্গে ঢুকলো, যেন কোন রাখাল তাদেরকে তাড়িয়ে নিয়ে গেছে।
তারপর সেই কালো লোকটি দুর্গ ঘেরাওকারী মুসলিমদের লক্ষ্য করে শত্রু বাহিনীর নিক্ষিপ্ত একটি পাথরের আঘাতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ইসলাম গ্রহণের পর এক ওয়াক্ত সালাত আদায় করারও সুযোগ তিনি পাননি।
তাঁর মৃতদেহটি এনে রাসূলুল্লাহ্ (সা.) পিছনে রেখে তাঁর মাথায় থাকা পাগড়িটি দিয়ে ঢেকে দেয়া হলো। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর দিকে তাকালেন। তখন তাঁর পাশে কয়েকজন সাহাবীও ছিলেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সা.) খুব দ্রুত মৃতদেহটির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন।
সাহাবায়ে কিরাম (রা) জিজ্ঞেস করলেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন কেন? তিনি বললেনঃ তার সাথে রয়েছে তার স্ত্রী-ডাগরচক্ষু বিশিষ্ট হুর। অর্থাৎ তিনি জান্নাতে পৌঁছে গেছেন এবং ডাগর চক্ষুবিশিষ্ট হুরদের সাথে অবস্থান করছেন।
আল্লাহু আকবার!